বাংলাদেশ রেলওয়েতে নতুন একটা সার্কুলার প্রকাশ হয়েছে পদ সংখ্যা ১৩৮৫ টি,
পদের নাম: ওয়েম্যান, আপনারা জানতে চেয়েছেন এই পদের কাজ কি ?
তো চলুন আমরা আজকে এই পদ নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো।
ওয়েম্যান পদে আবেদন করার আগে চাকরির কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন।
প্র্রথম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কথা বলি:
এখানে আবেদন করতে আপনার এসএসসি বা তার সমমানের যোগ্যতা থাকতে হবে।
নোট: অনেকেই বলেন এখানে চাকরি করলে কি পড়াশোনার সুযোগ আছে?
সরকারি সকল চাকরির ক্ষেত্রেই আপনি পড়াশোনার সুযোগ পাবেন, তবে শুধু পরীক্ষা দেবার সময় আপনাকে ছুটি দেওয়া হবে।
ওয়েম্যান পদের চাকরির প্রমোশন আছে?
এটার বর্তমান কোনো প্রমোশন নির্ধারণ করা হয়নি তবে সামনে এসব বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালেয়ের চিন্তা আছে।
এবার আসি ওয়েম্যান পদের কাজ কি এই বিষয়ে:
পদের কাজ হলো রেল পথের সার্বক্ষণিক রক্ষণাবেক্ষণ করা। ইহা একটি সম্পূর্ণ পেশী শক্তির কাজ।
মানে এই কাজ করতে শারীরিক শক্তি থাকতে হবে এবং বৃদ্ধ বয়সে পরিশ্রমের কারনে বেহাল অবস্থা।
এই কাজ করতে হয় কোদাল, শাবল, গেইতা, স্লিপার কাটা ,আগর এসকল যন্ত্রপাতি দিয়ে।
রোদ, ঝড় ,বৃষ্টি উপেক্ষা করে কাজ করতে হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে ৮ ঘন্টার কর্মঘণ্টা রাত ও গড়াতে পারে কারণ কাজ শেষ না হলে সেটা করে বাসায় পেরার সম্ভবনা থাকে।
প্রকৌশল বিবাগের কর্মচারীরা কতটা ভাগ্যবান, তা কি কেউ একবারও ভেবেছেন, ভাবেন নাই।
রেলওয়ের ১৪টি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে,
তারমধ্যে প্রকৌশল বিভাগএকটি।।
ঘড়ির কাটা ৭টা বা সাড়ে ৭টা বাজার সাথে সাথে ডিউটিতে হাজির হতে হয়, আর যদি না যান, তাহলে শুরু হলো বাকাবাজি বাকিটা ইতিহাস যা জয়েন করার পরে বুঝবেন।
অন্য কোনো বিভাগে কি এমন আছে?
ডিউটি তে গেছেন, এতটুকু কাজ করিতে করতে হবে,
আবার কল পড়লে ৫/৬কিলোমিটার হেঁটে ওখানে কাজ করতে হবে, খাবার সাথে নিয়ে যেতে হবে নয়ত উপোস থাকতে হবে। আবার এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশন পর্যন্ত পায়ে হেঁটে কাজের স্থানে যেতে হতে পারে কারন সব খানে যোযোগ ব্যবস্থা ভাল নয় সেটা ভালো করেই জানেন।
আইবাসের পূর্বে যখন বেতন দেওয়া হতো, বেতন তখন সাক্ষী হাজিরের মতো হাজির হতো, আর ওয়েম্যানরা তখন খোজ নিতো বেতন কবে হবে। কিন্ত বর্তমান একটু উন্নত হয়েছে বেতনটা সহজে পাবেন।
চিত্তবিনোদন/অসুস্থতা/দরকারে ছুটি কোনো কোনো সেকশনে ৫/৭দিনের বেশি দিতো না, মনে হচ্চে ছুটি ধার করতে হবে কর্তৃপক্ষ থেকে। এটা প্রকৌশল বিভাগেই দৃশ্যমান, অন্য ডিপার্টমেন্ট এ এমন না-ই।
Cl. CCL কিভাবে করতে হবে সেটাও ওয়েম্যানরা গোলক ধাঁধায় কাটায়।
PMC.জ্বর, সর্দিজ্বর এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা । মাথাব্যথা, দাঁত ব্যথা, কানের ব্যথা, শরীর ব্যথা, স্নায়ু প্রদাহ জনিত ব্যথা, ঋতুস্রাব জনিত ব্যথা এবং মচ্কে যাওয়ার ব্যথা। অন্ত্রে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, অস্ত্রোপচার পরবর্তী ব্যথা, প্রসব-পরবর্তী ব্যথা,
এটা শুধু প্রকৌশল বিভাগের জন্য ই জন্ম হয়েছে, ঢালাওভাবে অন্য বিভাগে নেই।।
আর কত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলে ওয়েম্যানরা ঝুঁকিভাতার আওতায় পড়বে তার কোন উত্তর কারো কাছে নেই।,,আর কিভাবে কাজ করলে কোন ধরনের দায়িত্ব পালন করলে দায়িত্ব ভাতা প্রাপ্য হবো এর ও কোনো ঠিক নেই।
ওয়েম্যান রা এতই ভাগ্যবান ২৪ঘন্টা কাজের জন্য মানসিক চাপে থাকতে হয় এবং সারাদিন কঠোর প্ররিশ্রমের পর প্রস্তুতি নিয়ে ঘুমোতে হয়।
তবে দিনশেষে আমরা শোকরিয়া আদায় করতে পারি রেলপথে চলা ট্রেন গুলো ঠিকমত তার গন্তব্যে পৌঁছেছে।।সত্যি ই ওয়েম্যান'রা ভাগ্যবান।।
শেষ প্রশ্ন মেয়েদের জন্য চাকরিটা কেমন হবে?
একটা ছেলের সাথে একটা মেয়ের কাজের পার্থক্য রয়েছে, এখানে জব হওয়ার পরে সেই পার্থক্যটা আর থাকবে না , সংসার বাচ্চাপালন, স্বামীকে সময় সব কিছু রাতে, দিনে সুযোগ নাই,
তবে দিন শেষে একটা কথা বলা যাবে এটা সরকারি চাকরি, পদ যেমনি হোক মানুষ তো এটাই শুনতে চায় ।
আমদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ
তারপরও লোকে বলবে সরকারি চাকরিজীবী ।
উত্তরমুছুন