এত কম স্কোরে প্রাইমারি শিক্ষক হতে পারব ভাবিনি



প্রামিারির নয়োগ পরীক্ষা নিয়ে খুব চন্তা হয়?  এটা পড়েন সব চিন্তা শেষ

 প্রাইমারির নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রতিদিনই দেখছি অবান্তর প্রশ্ন করছেন অনেকেই!

আমার রিটেনে এত, ভাইবাতে এত মার্কস পেতে পারি,

কোটা আছে বা নাই, বিজ্ঞান কোটা আছে বানাই,

সাধারন ছেলে বাবা মেয়ে উপজেলায় পোস্ট খালি এত

এখন আমার চাকুরি পাওয়ার সম্ভাবনা কেমন?

আবার এটাও যোগ করে দেন কেউ বাজে মন্তব্য করবেন না।

এটাতো গালি খাওয়ার মতোই পোস্ট। আমার নিজের ই" তো ইচ্ছে করে কিন্তু রাগ নিয়ন্ত্রণে রেখে আর কিছু বলিনা।
ভাই, বোন, এখানে কেউ ই আমরা কর্তৃপক্ষ নই যে আপনাকে গ্যারান্টি দিয়ে বলে দিবে আর কর্তৃপক্ষ এসব নিয়ে কোন তথ্য প্রকাশ করে না এত নাম্বার পেলে চাকুরিটা হবে ।

সত্যি কথা বলতে আমি এক সপ্তাহও ঠিকঠাক পড়ার সুযোগ পাইনি। তিন বছরের মেয়ে ও দেঁড় বছরের স্পেইশাল ছেলে বেবি সাথে সংসার ও কলেজের চাকুরি একা হাতেই সামলে আসলেই আমার পড়ার কোনো সুযোগ, সময় ,এনার্জি কোনোটাই ছিলো না।
যখন পরীক্ষা ঘনিয়ে আসলো তখন মিজানুর রহমানের স্যার এর বইটা বের করলাম। সম্ভবত এটা ১৮ সালে কিনেছিলাম।বই পড়তে বসলেই এক দিক থেকে মেয়ে আরদিকে ছেলের টানাটানিতে বই একদিনেই কয়খন্ড হয়ে গেল।

বাধ্য হয়ে বই রেখে মোবাইলে ইউটিউবের পড়ার ভিডিওগুলো দেখতাম। আর শুধু মাত্র বিগত বিসিএস এর প্রশ্ন গুলো ভাল করে পড়েছিলাম সত্যি বলছি এর বাইরে বেশি কিছু পড়তে পারিনি। তবে যা সময় পেয়েছিলাম মন দিয়ে ব্যাখ্যাসহ ভাল করে পড়েছি।

যাক এসব কথা আসল কথাই আসি। পরীক্ষার প্রশ্ন দেখে আমার কাছে মনে হলো বিসিএস মানের প্রশ্ন হয়েছে আবার মনে হল পড়াশোনা তো তেমন করিনি তাই হয়ত কমন আসেনি তাই যা পেরেছি তাই উত্তর করে চলে আসি কিন্তু আশা করার মতো কোনো পরীক্ষা হলো না।

ইউটিউব দেখে যা দাগাইছি মনে করে মিলালাম কাট মার্কস আসলো মাত্র ৪৭।
পরে অবশ্য কারেন্ট আ্যাফেয়ার্স দেখে মিলালে ৫২ হয়েছে। জানিনা সঠিক কত পাবো। কিন্তু এতেও কোনোরুপ আশা করিনি কেননা তখন জানতাম মতলব উত্তর দক্ষিন মিলে মাত্র ৩৯টি পোস্ট খালি আছে।

আর আমি আগেও প্রাইমারীর ভাইবা দিয়েছি আমার বাবার বাড়ি বাগেরহাট থেকে তখন মার্কস ৬০-৬২ ছিলো তাও জব হয়নি। তাহলে তো এবার আশাই করা যায় না।
তাই কোনোরকম মন খারাপ না করে আমার নিত্যদিন চলতে লাগলো। যেদিন শুনলাম রেজাল্ট দিবে সেদিন কেন জানি মনে হলো রিটেনে আমার পাশ করতেই হবে। সাথে সাথেই আল্লাহকে বললাম হে পরম করুনাময় তুৃমি সবকিছু জানো। আমার পরিস্থিতি তোমার থেকে ভালো আর কেউ বুঝেনা। আমার কীসে মঙ্গল আর কীসেই বা অমঙ্গল সবকিছুর তুমি অন্তর্যামী। আমার জন্য যদি প্রাইমারির জব ভালো না হয় দিওনা আমার কোনো দুঃখ নাই কিন্তু তুমি আমারে রিটেনে পাশ করাবা ই করাবা,করাতে হবেই হবে। এটাই আমার শেষ কথা। তুমি সকল ক্ষমতার অধিকারি যদিও আমার আশানুরূপ পরীক্ষা হয়নি কিন্তু তুমি চাইলে সব ই পারো।আমার এভাবে বলার দুইটা কারণ ছিলো।

আসলে শ্বশুর বাড়ি যে কি প্র্যারা সেটা না বলাই থাক...

এক, এইবার ই প্রথম শ্বশুরবাড়ি থেকে পরীক্ষা দিচ্ছি। আপন আবেদন করার সময় বলেছিলো পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিলে আবেদন করে দিবো আর নয়তো দরকার নাই। কারণ এবার এখান থেকে দিচ্ছো সবাই জানে তুমি ভালো ছাত্রী কিন্তু এখন যে দুই বাচ্চা সামলিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে এটা কেউ বুঝবেনা পাশ না করলে সবাই কথা শুনাবে।

দুই,পরীক্ষার আগেরদিন কলেজে ছুটি চেয়েছিলাম। আমার কলিগ দুজন ম্যাডাম ও পরীক্ষার্থী ছিলো কিন্তু তারা ছুটি চায়নি বলে এক স্যার বলেছিলো পরীক্ষা কি ওমুক ম্যাডাম একাই দিবে? আপনারা দিবেন না? দেখবোনে রেজাল্ট দিলে কে পাশ করে। কিন্তু ম্যাডাম দুজনের কেউ পাশ করেনি।

এই দুই কারনেই রেজাল্টের দিন বারবার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার কাছে বারবার বলছিলাম ইজ্জত, সম্মান দেওয়ার মালিক একমাত্র তুমিই। সবার কাছে আমার মুখ তুমি রাইখো। আমার জন্য এই জব ভালো না হলে দিওনা কিন্তু আমার সম্মান টা তুমি রাইখো আর কিছু চাইনা।

তারপর রেজাল্ট সিটে প্রথমবার আমার রোল নাম্বার খুজে পেলামনা। আমি একটু হাসলাম আর চোখ বুঝে আল্লাহকে বললাম নিশ্চয় তুমি যা করো আমার মঙ্গলের জন্য করো। তোমার সিদ্ধান্তই আমি খুশি মনে মেনে নিলাম। আলহামদুলিল্লাহ।

কিন্তু পরেক্ষনেই আমার আগের,পরের রোল টিকছে কিনা দেখতে যেয়ে দেখি আমার রোল ও আছে।
আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলামনা চোখ কচলিয়ে আবার দেখলাম। না ঠিক ই তো আছে আমার রোল ই তো! তাহলে আগেরবার দেখলাম না কেন? আল্লাহই ভালো জানেন। তিনি সর্বজ্ঞ,মহাজ্ঞানী।

আমি রেজাল্ট দেখে সত্যিই কেঁদে ফেলেছিলাম। বার বার শুধু এটাই মনে হচ্ছিল ডাকার মতো ডাকলে তিনি অবশ্যই শোনেন। দেখছি এরকম একটা অবান্তর প্রশ্ন করছেন অনেকেই।

যারা বলে অনুমান করে অথবা শোনা কথা।
যাদের চাকুরিটা খুব বেশি প্রয়োজন গভীর রাতে নফল নামাজ পড়ে অসীম দয়াময়ের কাছে দুহাত তুলে চান। ডাকার মতো ডাকলে তিনি কখনো কোনো বান্দাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেননা।


পোস্ট কারী.. সাথী পারভীন


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

[পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক] অফিস সহায়ক ও নিরাপত্তা প্রহরী পদের প্রশ্ন প্যাটার্ন ও সাজেশন

[ সিভিল সার্জন কার্যালয় ] নিয়োগ পরীক্ষার সাজেশন / প্রশ্ন প্যাটার্ন / মান বণ্ঠন / সার্কুলার / সাস্থ্য সহকারী পদের কাজ কি?

( সিভিল সার্জনের কার্যালয়) স্বাস্থ্যসহকারী পদের প্রশ্ন সমাধান

ওয়েম্যান পদের প্রশ্ন সমাধান, বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েম্যান পদের প্রশ্ন সমাধান, wayman post quetion solution

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড এর নিয়োগ সহায়িকা বই / বিগত সালের প্রশ্ন সমাধা ও সাজশেন